খেলাধুলা

ভারত না খেললে এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ কী?

২০২৫ সালের এশিয়া কাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দাবি করেছে, বিসিসিআই নাকি মৌখিকভাবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)-কে জানিয়েছে, তারা এ বছরের এশিয়া কাপে অংশ নেবে না। অথচ এবারের টুর্নামেন্টের আয়োজক দেশও ভারত।

তবে বিসিসিআই-এর যুগ্ম সচিব দেবজিত সাইকিয়া টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এসব খবর ভিত্তিহীন। এখনো এ বিষয়ে বিসিসিআই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বা এসিসিকে কিছু জানায়নি। সিদ্ধান্ত হলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

কেন ভারতের না খেলার গুঞ্জন?

মূলত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সীমান্তসংক্রান্ত বিষয়গুলোই এই শঙ্কার পেছনে মূল কারণ। বর্তমানে এসিসির সভাপতি হলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি, যিনি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। এই প্রেক্ষাপটে ভারত চায় না পাকিস্তানকে সরাসরি আতিথ্য দিতে।

উল্লেখ্য, অতীতেও রাজনৈতিক কারণে এশিয়া কাপ বর্জনের নজির রয়েছে। যেমন:

  • ১৯৮৬: শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপে ভারত অংশ নেয়নি।
  • ১৯৯০-৯১: ভারতের মাটিতে এশিয়া কাপে পাকিস্তান খেলেনি।
  • ২০২৩: ভারত পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানালে টুর্নামেন্ট হয় হাইব্রিড মডেলে।

ভারত ছাড়া এশিয়া কাপ সম্ভব?

সাধারণভাবে মনে হতে পারে, ভারত না থাকলেও এশিয়া কাপ আয়োজন সম্ভব। অতীতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতে টুর্নামেন্ট আয়োজন হয়েছে। তবে এখনকার বাস্তবতা ভিন্ন।

ভারতীয় দর্শকের সংখ্যা, টিভি রেটিং, স্পনসরশিপ এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে আয়—সবকিছুর জন্য ভারতই মূল চালিকাশক্তি। ভারত না থাকলে এই রাজস্ব অনেকটাই কমে যাবে, যা এসিসির পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন।

বর্তমান পরিস্থিতি:

  • ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ায়নি।
  • রাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকলেও এসিসি সিদ্ধান্ত নেয়নি।
  • ভারত না খেললে বিকল্প আয়োজক দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কা বা আমিরাত থাকতে পারে।
  • তবে অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা ভেবে এসিসি হয়তো ভারতকে ছাড়িয়ে এশিয়া কাপ আয়োজন করবে না।

উপসংহার:

ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া এশিয়া কাপ আয়োজন খুবই কঠিন। যদিও অতীতে এমন ঘটনা ঘটেছে, বর্তমান বাণিজ্যিক বাস্তবতায় ভারত ছাড়া টুর্নামেন্ট আয়োজন একপ্রকার অসম্ভব। এখন দেখার বিষয়, রাজনৈতিক সমাধান হয় কি না, অথবা হাইব্রিড মডেলের মতো কোনো মধ্যমপন্থা বের হয় কি না।

Show More

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button