আন্তর্জাতিক

এক রাতেই গাজায় নিহত ১০০ ফিলিস্তিনি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক রাতে অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। রবিবার রাতভর চালানো এই হামলায় বহু পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খলিল আল-দেকরান।

এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে নতুন করে মধ্যস্থতা শুরু করেছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আলোচনায় এখনো তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বৃহস্পতিবার থেকে গাজাজুড়ে ইসরায়েল যে হামলা জোরদার করেছে, তা মূলত গাজার কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি, মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েল চিকিৎসা, খাদ্য ও জ্বালানির প্রবেশ বন্ধ রেখেছে, যাতে হামাসকে চাপের মধ্যে ফেলে জিম্মি মুক্ত করা যায়।

হামাস জানিয়েছে, তারা কেবল যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেবে। স্কাই নিউজ আরাবিয়া ও বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, হামাস একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মিদের প্রায় অর্ধেককে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছাড়ার দাবি জানানো হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় জটিলতা আরও বেড়েছে, কারণ হামাস নেতা মোহাম্মদ সিনওয়ারের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়েছে। যদিও হামাস কিংবা ইসরায়েল কেউই এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেনি।

এক ইসরায়েলি জিম্মির মা, আইনাভ জাঙ্গাউকার, এক্স-এ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার শুধু আংশিক চুক্তিতে আগ্রহী। তারা আমাদের কষ্ট দিচ্ছে ইচ্ছাকৃত। আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে আনুন, সব ৫৮ জনকেই!”

রাতের হামলায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে একটি শরণার্থী তাঁবুতে আঘাত হানে, এতে নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ নিহত হন। কয়েকটি তাঁবু পুড়ে যায় আগুনে। এই ঘটনাকে হামাস ‘নৃশংস অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্রকেও দায়ী করেছে।

রবিবারের আগের হামলাগুলোতেও সাংবাদিক, শিক্ষক, শিশুসহ অনেকেই নিহত হন। গাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক ও হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই জাকারিয়া আল-সিনওয়ার এবং তার তিন সন্তানও নিহত হন এক হামলায়।

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে এবং শিফা হাসপাতাল রক্ত সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার ৭৫ শতাংশ বন্ধ হয়ে গেছে জ্বালানি সংকটে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তা এখনও চলমান। এই অভিযানে গাজার অবকাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ইতোমধ্যেই ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

Show More

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button